কারক ও কারকের প্রকারভেদ ।।বাংলা গ্রামার
কারক
বাক্যে ক্রিয়ার সঙ্গে নামপদের যে অন্বয় বা সম্বন্ধ তাকেই কারক বলে।বাংলা বাক্যে অন্তর্গত ক্রিয়ার সঙ্গে অন্য পদের ছয় প্রকারের সম্বন্ধ হতে পারে ।যেমন=
"ঢাকায় নবাব ধনাগার থেকে স্বহস্তে দরিদ্রদেরকে টাকা দিলেন।"
এই বাক্যে দিলেন ' ক্রিয়াপদ।
কে দিলেন?-নবাব
কি দিলেন?-টাকা
কি দিয়ে দিলেন?-স্বহস্তে
কাকে দিলেন?-দরিদ্রদেরকে
কোথা থেকে দিলেন?-ধনাগার থেকে
কোথায় দিলেন?-ঢাকায়
এখানে নবাব-কর্তৃকারক
টাকা-কর্মকারক
স্বহস্তে-করণ কারক
দরিদ্রকে-সম্প্রদান কারক
ধনাগার-অপাদান কারক
ঢাকায়-অধিকরণ কারক
প্রকারভেদঃকারক মূলত ছয় প্রকার=
১.কর্তৃকারক ২.কর্মকারক
৩.করণ কারক ৪.সম্প্রদান কারক
৫.অপাদান কারক ৬. অধিকরণ কারক
কর্তৃকারকঃকোন বাক্যে যে ক্রিয়া সম্পাদন করে তাকে কর্তৃকারক বলে।এছাড়া ক্রিয়ার সংগে কে বা কারা যোগ করে প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায় তাকে কর্তৃকারক বলে ।
যেমন-মফিজ ভাত খায় ।এখানে কে ভাত খায় প্রশ্ন করা হলে ,উত্তর পাওয়া যায় মফিজ ।তাই এই বাক্যে 'মফিজ' কর্তৃকারক।
কর্মকারকঃকর্তা যা করে তাই কর্মকারক।ক্রিয়ার সাথে কি বা কাকে দ্বারা প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায় তাকে কর্ম কারক বলে ।করিম ফুটবল খেলছে ।করিম কি খেলছে ? উত্তর ফুটবল ।তাই এই বাক্যে ফুটবল কর্মকারক।
করণকারকঃকর্তা যা দ্বারা ক্রিয়া সম্পাদন করে তাকে করণ কারক বলে।অথবা ক্রিয়া সম্পাদনের যন্ত্র,উপকরণ বা সহায়ককেই করণ কারক বলে।বাক্যস্থিত ক্রিয়াপদের সংগে কিসের দ্বারা ,কি উপায়ে প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায় তাকে করণ কারক বলে ।যেমন-
সে ছুরি দিয়ে কলম কাটে।
সম্প্রদান কারকঃযাকে অভিপ্রায় করে দান করা যায় তাকে সম্প্রদান কারক বলে।অথবা-যাকে স্বত্ব ত্যাগ করে দান,অর্চনা সাহায্য ইত্যাদি করা হয় ,তাকে সম্প্রদান কারক বলে।যেমন-
ভিক্ষুককে আমি পয়সা দিলাম।
অপাদান কারকঃযা থেকে ক্রিয়া প্রকাশিত হয় তা অপাদান কারক।আবার,যা থেকে কিছু বিচ্যুত,গৃহীত,জাত,বিরত,আরম্ভ,দূরীভূত ও রক্ষিত হয় এবং যা দেখে কেউ ভীত হয় তাকেই অপাদান কারক বলে ।যেমন=গাছ থেকে পাতা পড়ে।
অধিকরণ কারকঃযাতে ক্রিয়া সম্পন্ন হয়, ক্রিয়ার সে আধার কে অধিকরণ কারক বলে ।অথবা ক্রিয়া সম্পদানের কাল অর্থাৎ সময় এবং আধার অর্থাৎ স্থান কে অধিকরণ কারক বলে।
যেমন=বনে বাঘ থাকে ।
No comments