নৈতিকতার অবক্ষয় এবং বর্তমান সমাজ ।(বাংলা গ্রামার)=পর্ব-১
নৈতিকতা মানেই হলো নীতি মূলক আচার ব্যবহার ।যা বর্তমান সমাজ থেকে ধীরে ধীরে উঠে যাচ্ছে ।বলা যেতে পারে যে উঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।মা বাবা রা আজ সন্তান নিয়ে গালগল্পে দিশেহারা ।সবার চোখে আমার সন্তানই সেরা এই মর্মে বিশ্বাসী হয়ে অতি আবেগে সন্তানের খোঁজ খবর নেওয়ার প্রয়োজনই পড়ে না। তার উপর ক্লাসে প্রথম হওয়ার সুবাদে গিফট হিসেবে হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে অতি ডিজিটাল পণ্য মোবাইল ফোন।গেইম আর নীল ছবির ঠেলায় দিশেহারা সন্তান।বাবা-মা শেখাতে ভুলে যাচ্ছে আদব কায়দা।জরিয়ে যাচ্ছে প্রেম নামক সম্পর্কে ।এতকিছুর পর যখন বাবা -মা বুঝতে পারলেন যে তার অতি আদরের দুলাল-দুলালী আর স্বাভাবিক জীবনে নেই ।একটু একটু শাসন করতে গিয়ে বুঝলেন বেলা অনেক দূর গরিয়েছে আর কিছুই করার নেই দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলা ছাড়া ।
আবার উঠে যাচ্ছে মানুষের প্রতি মানুষের বিশ্বাস আর শ্রদ্ধাবোধ। বিশ্বাস এখন এতোটাই ঠুনকো হয়ে গেছে যে এখন যদি দুইজন নারী পুরুষকে এক সাথে গল্প করতে হাসতে দেখলে ধরে নেওয়া হয় তারা খারাপ কিছু করছে ।এই সন্দেহের তীর থেকে রেহাই পাচ্ছে না বাচ্চারাও।যদিও এই সন্দেহের যথেষ্ট কারণ রয়েছে।তৃতীয় শ্রেণীর ছেলেটাও তার মাকে বলে ক্লাসের ফুলিরে তার ভালো লাগে ।মেয়েটি নাকি তাকে মাঝে মাঝে তার টিফিন খেতে দেয়।তাকে আমি ভালোবাসি।মা সন্তানের এমন মধুর কথায় হাসতে হাসতে গড়িয়ে পরে।কথাটি হেসে হেসে পাশের বাড়ির ভাবিদের সাথেও শেয়ার করে ,যেন তার ছেলের কোন বিশ্বজয়ের গল্প করছে ।নবম দশম শ্রেণীর ছেলেমেয়ের অবস্থা আরো করুণ।
কলেজ জীবনে প্রেমিকের হাত ধরে ঝড়ে জঙলে লুকোচুরি খেলায় যেন প্রেমের আসল স্বার্থকতা।অশিক্ষিতদের চেয়ে শিক্ষিত মানুষের চরিত্রই বেশি কলুষিত ।নোংরামী যেন তাদের মজ্জাগত অধিকার ।ঘরে সুন্দরী বউ ,অফিসে কলিগ,বাইরে গার্লফ্রেন্ড লাজ লজ্জা ভুলে এযেন চরিত্র স্খলনের প্রতিযোগিতায় নেমেছে তারা।
বিবাহিত নারী পুরুষের অবৈধ সম্পর্কে জড়ানো যেন আজ মহামারী আকার ধারণ করেছে ।তারা অবিবাহিত দেরকেও ছারিয়ে যেতে চাই যেন ।আজকাল হাজারটা খুনের নেপথ্যেই পরকীয়া ।পরকীয়া এমন একটা ব্যাধি যাতে একবার জড়িয়ে গেলে আর বের হতে পারছে না ।ফলশ্রুতিতে এর থেকে বের হতে গিয়ে নিজের অপকর্ম ঢাকতে গিয়ে হত্যার মত ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত ।এ যেন আর শুধু পারিবারিক ও সামাজিক সমস্যা নয় ,রুপ নিয়েছে রাষ্ট্রিয় সমস্যায়।এই সমস্যা থেকে বের হওয়ার আদৌ কোন সমাধান আছে কি ?
আজকাল আরো একটি সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করছে আর তা হলো গুজবীয় হত্যা ।নিশ্চিত না হয়েই শুধুমাত্র সেন্দেহের জেরে প্রকাশ্যে মানুষ হত্যা করাকে আমি নাম দিয়েছি গুজবীয় হত্যা।মানুষের যেন আর নিজের প্রতিই বিশ্বাস নেই যদি থাকত তাহলে পদ্মা সেতু তৈরিতে মানুষের মাথা লাগবে এই গুজব সারাদেশে ছড়াতো না ।মানুষের এই দূবলতার কারণে এক শ্রেনীর মানুষ গুজব রটিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করছে বলেও অনেকে বিশ্বাস করছে কিন্তু মিথ্যা গুজব রটিয়ে মানুষকে বোকা বানিয়ে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করে কি স্বার্থ উদ্যার করছে তা আমার বোধগম্য নয়।
ছেলেধরা সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার স্বীকার মেয়েটির অর্ধ্মৃত লাশ ঘিরে কয়েকশো মানুষ অথচ তারা একজনের মারের হাত থেকে তাকে না বাচিয়ে ভিডিও ধারণ করছে ,দেখছে জীবনের সেরা সার্কাস ।কিছু করার কি দরকার ভবিষ্যতে নাতি নাতনির কাছে তো গল্প করতে পারবো ।কিন্তু সে যে নাতী নাতনীর কাছে গল্প করার মতো পর্যায়ে পৌঁছাতে পারবে নাকি তার গল্প অন্য কেউ তার পরবর্তী প্রজন্মর কাছে গল্প করার প্রস্তুতি নেবে তা কি আর আগে থেকে বলা যায়?
দারুণ লিখেছে।
ReplyDeleteThank you.
Delete