লোকসাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন কিছু মজার ছড়া /ছড়া/Some of the earliest patterns of folk literature are some interesting rhymes
ছড়া লোকসাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন।ছড়া শিশুতোষ রচনা হলেও তা কেবল শিশুদের মনোরঞ্জনের সৃষ্টি হয়নি ।শিশু - কিশোর,যুবক,বয়স্ক সকল শ্রেণির জন্য রচিত।
ছড়ার সংজ্ঞা নির্ণয় করা কঠিন।শিশুদের কাছে সুর করে ছন্দোবদ্ধ পদ বলাই ছড়া নয়।ছড়া হলো সমষ্টিগত লোকমনের সৃষ্টি,সাধারণ মানুষের আবেগ ,কল্পনা,সপ্ন,স্মৃতি,অভিজ্ঞতার কথা ভাষার ছন্দে,বন্ধনে ক্ষুদ্র অবয়বে যে বৈচিত্র্যময় রূপ লাভ করেছে তাই ছড়া ।
ছট্ শব্দ থেকে ছড়া শব্দের উৎপত্তি বলে মনে করা হয় । ছট্ শব্দের অর্থ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা । কিন্তু ছড়া মোটেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে না বরং তা ধানের ছড়ার মতই গুচ্ছ বন্ধনে বাঁধা থাকে।
সমাজের নারীপুরুষ বিভিন্ন উপলক্ষে ছড়া ব্যবহার করে ।বিশেষ করে বাচ্চাদের ভুলাতে ছড়ার ব্যবহার বেশি।এই ছড়ার মধ্যে চরম সত্য ও প্রকাশিত হয়েছে অকপটে ।যেমন মারাঠা বর্গীদের নিয়ে বানানো ছড়া-
“ খোকা ঘুমালো পাড়া জুড়ালো
বর্গী এল দেশে
বুলবলিতে ধান খেয়েছে খাজনা দেব কিসে
ধান ফুরালো পান ফুরালো খাজনার উপায় কি
আর কটা দিন সবুর করো রসুন বুনেছি”
এই ছড়াটার দ্বারা তৎকালীন মারাঠাদের শাসনের চিত্র ফুটে ওঠেছে।সে সময় মারাঠাদের বর্গী বলা হতো।
ছড়া মূলত ছেলে ভুলনোরই গান।যদিও বড়রাই এর আবিষ্কারক।যেমন মা তার ক্রন্দনরত সন্তানকে ভুলানোর জন্য আকাশের দিকে তাকিয়ে গাইছে.....
”আয় আয় চাঁদ মামা
টিপ দিয়ে যা
চাঁদের কপালে চাঁদ টিপ
দিয়ে যা
ধান ভানলে কুড়ো দেব
মাছ কুটলে মুড়ো দেব
কালো গাইয়ের দুধ দেব
দুধ খাওয়ার বাটি দেব
চাঁদের কপালে চাঁদ টিপ
দিয়ে যা”
সমাজে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে মুরুব্বিরা ব্যবহার করে তাদের অভিজ্ঞতার কথা।তাঁরা এভাবেই বর্ণনা করে ...কথায় আছে না ....
” নারী ভালা বিমলা
পানি ভালা অমলা
গাছ ভালা নাগেশ্বর
পুরুষ ভালা সাদু সদাগর’”
গণনা করতে ব্যবহার করা হয় যেসব ছড়া ।যেমন-
ষোল কৈ ষোলয়ে
চার কৈ গেলে মালিয়ে
থাকে বর।
--------------------
থাকলো এক
চোখ থাকলে পাতে চেয়ে দেখ।
ছোট বাচ্চাদের হাসাতে ব্যবহৃত ছড়া............
দুধ দি ভাত দি
কাল মেকুরের গু দিয়ে
তোর শাশুড়ির মেকুর আছে ?
দুধ খায়?
কেমন করে ডাকে?
মিঁয়াও মিঁয়াও মিঁয়াও
এখানে মেকুর মানে বিড়াল ও দি মানে দিয়ে ।বাচ্চাদের হাতের কব্জি থেকে মিঁয়াও মিঁয়াও করতে করতে একেবারে বগলের নিচে হাত দিয়ে কাতুকুতু দেওয়া ও বাচ্চাকে হাসানোই হলো এ ছড়ার বিশেষত্য।
আবার সংলাপের ভঙ্গিতে রচিত ছড়াই একজন শ্রোতা থাকে এবং তাকে টিপ্পনি কেটে বলা হয়...
” দাদা আমায় লোভ দেখায়
তোর দেব বিয়ে
সেই অবধি মলাম আমি
নাড়ার বোঝা বয়ে ।”
শিশু-কিশোররা এক সাথে দল বেঁধে যে ছড়া গায়
আয়রে আয় ছেলের পাল,
মাছ ধরিতে যাই
মাছের কাঁটা পায়ে ফুটলো,
দোলায় চেপে যায় ।
দোলায় আছে ছ-পণ কড়ি,
গুনতে গুনতে যাই ।
এ নদীর জলটুকু টলমল করে ।
এ নদীর ধারে রে ভাই,
বালি ঝুর ঝুর করে ।
চাঁদ মুখেতে রোদ লেগেছে
রক্ত ফুটে পড়ে ।
আরো কিছু মজার ছড়া ...........
বাহবা কি মজারে ।
নাক কাটা রাজারে ।
টুনির গোশত খেতে গিয়ে
খেলো ব্যাঙ ভাজারে ।
সাত রাণীর গেল নাক কাটারে।
এ কেমন রাজার সাজারে।
চলবে
No comments